

মো. শাহজাহান বাশার, স্টাফ রিপোর্টার
ঢাকা, ২৩ জুলাই ২০২৫, বুধবার
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি অবৈধ গ্যাস সংযোগের বিরুদ্ধে একযোগে অভিযান পরিচালনা করে একাধিক এলাকা থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন, উপকরণ জব্দ এবং মোটা অঙ্কের জরিমানা আদায় করেছে। গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার প্রতিরোধে ধারাবাহিক অভিযানের অংশ হিসেবে গত ২২ জুলাই, মঙ্গলবার দিনব্যাপী রাজধানী ঢাকাসহ নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
ঢাকা বিক্রয় বিভাগ-৫ এর আওতাধীন কামরাঙ্গীরচর এলাকায় সিনিয়র সহকারী সচিব ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মনিজা খাতুনের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে শাহ্জালাল মেটাল নামের একটি খানাডুলি কারখানায় বাণিজ্যিকভাবে গ্যাস ব্যবহারের অভিযোগে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এ সময় ৩/৪’’ জি আই পাইপ ১০ ফুট, পিভিসি পাইপ ৩০ ফুট, বুস্টার ১টি, হুইজ পাইপ ১০ ফুট এবং পাইপ বার্নার ২টি জব্দ করা হয়। উক্ত কারখানা মালিককে তাৎক্ষণিকভাবে ৫০,০০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
একই দিনে জোবিঅ-বন্দর এর আওতাধীন জাঙ্গাল, বারপাড়া, বন্দর, নারায়ণগঞ্জ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হাসিবুর রহমান। আনুমানিক ৬ কিলোমিটার এলাকায় ছড়িয়ে থাকা প্রায় ১০০০ অবৈধ চুলার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এ সময় ২৩০ ফুট পাইপ, ২৪টি রেগুলেটর ও ৬টি লকউইং কক জব্দ করা হয়।
গাজীপুর জেলার কাশিমপুরের পূর্ব বারেন্ডা এলাকায় মো: শহীদ উল্লাহ, সহকারী কমিশনার (জেলা প্রশাসন গাজীপুর) এর নেতৃত্বে দুটি স্পটে অভিযান চালানো হয়। এখানে ৩২টি বাড়ির ৩০০টি ডাবল চুলার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। ৪৫০ ফুট বিভিন্ন ব্যাসের পাইপ জব্দের পাশাপাশি অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহারকারী ৪টি বাড়ির মালিকদের নিকট হতে ২,৭৫,০০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
মেট্রো ঢাকা বিক্রয় বিভাগ-১ এর আওতাধীন ঠুলঠুলিয়া, ডেমরা এলাকায় সিমন সরকার, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়) এর নেতৃত্বে তিনটি স্থানে অভিযান চালানো হয়। শ্রাবণ ওয়াশিং, ব্রাদার্স ওয়াশিং, নিউ কালার ওয়াশিং এবং নিউ জিন্স ওয়াশিং নামক প্রতিষ্ঠানগুলোতে আবাসিক সংযোগ ব্যবহার করে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে গ্যাস ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়।
এ সময় ৫৯০ ফুট পাইপ, ১১টি আবাসিক রেগুলেটর, ২টি কম্প্রেসার, ২টি চুলা, ৪টি পাইপ বার্নার, ১০০ ফুট হোস পাইপ ও ৬০ ফুট ১” প্লাস্টিক পাইপ জব্দ করা হয়। নিউ কালার ওয়াশিং এবং নিউ জিন্স ওয়াশিং এর মালিকদের নিকট থেকে যথাক্রমে ১ লক্ষ এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
এছাড়াও সম্পূর্ণ অবৈধ ২০টি আবাসিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে কিল করা হয় এবং গ্রাহক সংকেত ১০১২৪৭১৪ – জনাব আজিজুল হকের সংযোগটি বকেয়ার কারণে বিচ্ছিন্ন করা হয়।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি-এর ব্যবস্থাপক (মিডিয়া ও জনসংযোগ) মোঃ আল আমিন জানান, “অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার রোধে আমাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে। কোনো ধরনের অসাধুতা বা অপব্যবহার সহ্য করা হবে না। আমরা সতর্ক করে দিচ্ছি, অবৈধ সংযোগ গ্রহণকারীরা এখনই তা বিচ্ছিন্ন করুন, অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অবৈধ গ্যাস সংযোগ ব্যবহারের বিরুদ্ধে তিতাস গ্যাসের এই ধারাবাহিক অভিযান দেশের গ্যাস অপচয় রোধ ও নিরাপদ ব্যবস্থাপনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। জনস্বার্থে পরিচালিত এ ধরনের অভিযানে প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা এবং দ্রুত আইনি কার্যক্রম জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধারে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।