মোঃ শাহজাহান বাশার,
স্টাফ রিপোর্টার
গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার এবং বিপজ্জনক সংযোগের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন পিএলসি। চলমান নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে একযোগে নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর এবং ঢাকা জেলার বিভিন্ন স্পটে পরিচালিত অভিযানে শত শত অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন, বিপুল পরিমাণ পাইপলাইন জব্দ ও জরিমানা আরোপ করা হয়েছে।
২৩ জুলাই ২০২৫, বুধবার, *জনাব সিমন সরকার , সিনিয়র সহকারী সচিব ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের নেতৃত্বে তিতাস গ্যাসের জোবিঅ - এনায়েতনগর-কাশীপুরের আওতায় কামরাঙ্গীরচর এলাকায় মেসার্স ক্রোনি এপারেলস লিমিটেড এ অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি পূর্বে বিচ্ছিন্নকৃত গ্রাহক হলেও নতুনভাবে ২ ইঞ্চি ব্যাসের সার্ভিস লাইন স্থাপন করে বাইপাসের মাধ্যমে অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার করছিল।
তিতাস গ্যাসের পক্ষ থেকে ওই অবৈধ লাইন **উৎস পয়েন্ট থেকে কিলিং** করে সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন করা হয়। এর আগে, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ এবং ১২ মার্চ ২০২৫ তারিখে একই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গ্যাস চুরির প্রমাণ পাওয়ায় লাইন কেটে দেওয়া হয় এবং জরিমানাসহ মামলা দায়ের করা হয়—যা এখনো চলমান।
একই দিনে, তিতাসের **সাভার আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ**-এর অভিযানে **মেসার্স বিসমিল্লাহ হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট**, কাজী মার্কেট, কাশিমপুর, গাজীপুরের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। হোটেলটির মোট গ্যাস লোড ছিল ১,৭৩৩ ঘনমিটার, যার ফলে প্রতি মাসে প্রায় **৫২,৮৫৭ টাকা মূল্যের গ্যাস চুরি রোধ** করা সম্ভব হয়েছে।
এছাড়া, **জনাব মোঃ মুশফিক-উল-আলম**, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, গাজীপুর-এর নেতৃত্বে জয়দেবপুরের মির্জাপুর রোড, বাংলাবাজার এবং বাঘের বাজার এলাকায় দুটি স্পটে অভিযান চালানো হয়। এতে আনুমানিক **৫০টি ডাবল বার্নার সংযোগ বিচ্ছিন্ন** এবং **৩০০ ফুট বিভিন্ন ব্যাসের পাইপ** জব্দ করা হয়। অভিযানে এক গ্রাহকের বিরুদ্ধে **এক লক্ষ টাকা জরিমানা** আরোপ করা হয়েছে।
উল্লেখযোগ্য অভিযানের মধ্যে ছিল নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার কাঠালিয়াপাড়া ও নয়াপুর এলাকায় পরিচালিত অভিযান। **জনাব মনিজা খাতুন**, সিনিয়র সহকারী সচিব ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের নেতৃত্বে পরিচালিত এই অভিযানে প্রায় **৩.৫ কিলোমিটার এলাকায় ৮৩০টি আবাসিক বার্নারের অবৈধ সংযোগ** বিচ্ছিন্ন করা হয়। এ সময় জব্দ করা হয় **১৮০ ফুট এমএস পাইপ এবং ৩৫০ ফুট প্লাস্টিক পাইপ**, যা অবৈধ সংযোগ স্থাপনের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছিল।
তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ জানায়, এ ধরনের অভিযান নিয়মিত চলবে এবং যেকোনো প্রকার অবৈধ সংযোগের বিরুদ্ধে **জিরো টলারেন্স** নীতি গ্রহণ করা হয়েছে।
মোঃ আল-আমিন: ব্যবস্থাপক (মিডিয়া ও জনসংযোগ), তিতাস গ্যাস টি অ্যান্ড ডি পিএলসি, গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানান—“অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার শুধু আইনবিরোধী নয়, এটি জননিরাপত্তার জন্যও চরম হুমকিস্বরূপ। জনসচেতনতা বাড়ানো ও নিয়মিত অভিযানের মাধ্যমে তিতাস গ্যাস গ্যাসচুরি বন্ধে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছে।”
জাতীয় সম্পদ হিসেবে প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার শুধুমাত্র বৈধ ও চুক্তিবদ্ধ ব্যবহারকারীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত। কিন্তু চুরি ও অবৈধ সংযোগের মাধ্যমে গ্যাসের অপব্যবহার শুধু প্রতিষ্ঠান বা সরকারের ক্ষতিই করছে না, **জনসাধারণের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা এবং নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণও হয়ে দাঁড়াচ্ছে**।
তিতাস গ্যাসের এই ধরনের কঠোর অভিযান এবং দৃষ্টান্তমূলক জরিমানা ভবিষ্যতে গ্যাস চুরি রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।